ঘটনাটি সোমবার (২২ জুন) গভীর রাতের। দগ্ধ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাইগাছা গ্রামের আফজাল হোসেন (৩৮), তাঁর স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩২), মেয়ে মলি খাতুন (৮) ও দুই মাসের শিশুকন্যা আফসানা খাতুন।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতের খাবার খেয়ে আফজাল হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। গরমের কারণে ঘরের জানালা খোলা ছিল। রাত দুইটার দিকে দুর্বৃত্তরা জানালা দিয়ে অ্যাসিড–জাতীয় কিছু তরল দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মারে। ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চারজনেরই শরীর ও মুখমণ্ডলে তা পড়ে। সবাই চিৎকার দিয়ে ওঠেন। গড়াগড়ি শুরু করেন। পরে বাবা ও মা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে ঘরের বাইরে আসেন। বিছানাপত্রও পুড়ে যায়।
চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে দগ্ধ চারজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান প্রতিবেশীরা। বর্তমানে তাঁরা হাসপাতালের ছয় নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুই মাসের শিশু আফসানা ও তার মা জেসমিনের শরীরে অ্যাসিড–জাতীয় পদার্থ বেশি পড়েছে।
আফজাল হোসেনের ভাগনে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মামার কারওর সঙ্গে বিরোধ ছিল না। দুর্বৃত্তরা কেন এই অমানবিক কাজ করেছে, তা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁর মামার তালাক দেওয়া দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঝামেলা হতো। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ দেখছেন না। তাঁরা সুস্থ হলে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘরের খাটের বিছানাপত্র পুড়ে গেছে। আলামত যাতে নষ্ট না হয় এ জন্য ঘরটি তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নমুনা দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, অ্যাসিডই নিক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিশের একটি দল রাজশাহীতে গিয়ে দগ্ধ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে। পুলিশ ঘটনাটিকে স্পর্শকাতর হিসেবে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
এই বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দায়িত্বশীল কারওর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তদন্তকাজে হাসপাতালে অবস্থান করা হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম চিকিৎসকের বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাসিডই নিক্ষেপ করা হয়েছে। চারজনেরই শরীরের বিভিন্ন জায়গা ও মুখমণ্ডল ঝলসে গেছে। তবে দুজনের অবস্থা বেশি খারাপ।